শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

মানচিত্রের সন্ধানে

তোমাকে ভালোবাসার পর
আমি আমার মানচিত্রটা হারিয়ে ফেলেছি,
এতোদিন তা বুঝিনি;
কেননা তোমার বুকের ভেতর বড্ড যত্নে কাটিয়েছি
জীবন বসন্তের ক'টা দিন।
কিন্তু কি করবো এখন?
তুমিতো চলে গেছো,
থাকবেই বা কেন?
সিটি কর্পোরেশন বা রাষ্ট্র থেকেতো আমার হৃদয় সামলানোর
কোন টীকা দেয়া হয় নি,
কারো ভালোবাসা আমৃত্যু পাবার মতো
ধরণীর বুকেতো কোন কাজ আমি করি নি।
আমি কি আমাকে চিনি না!
তুমি নিজেকে কখনো অপরাধী ভেবো না,
আমাকে ভেবে নিও সাধারণ কেউ
যার সব স্বপ্ন শুধু তোমাকে ঘিরে
কিন্তু তুমি তার অচেনা।
অচেনা পথিকের মতোই কখনো যদি তোমার কাছে গিয়ে
আমার হারানো মানচিত্র খুঁজি,
তুমি করুণা করে বলে দিও
নয়তো পাশ কেটে চলেই যেও;
আপত্তি নেই।
আমি না হয় নিজের স্বাধীন মানচিত্র খুঁজতে খুঁজতেই
পাগল হবো,
মারা যাবো;
কার কি আসে তাতে!

কষ্টের সংজ্ঞা

তোর ইচ্ছায় ভালোবাসিস্
যাকে তুই চাস্,
আমায় দেয়া স্বপ্নগুলো
পারলে নিয়ে যাস্।
ভিন্ন গ্রহে ঘুরে দ্যাখ্
সুখের সংজ্ঞা কি?
ক্লান্ত হলে ফিরে আসিস্
আমি দিব না ফাঁকি।
কখনো যদি দু'চোখ তোর
ভিজে উঠে জলে,
তখন হয়তো বুঝবি তুই
কষ্ট কাকে বলে?

অদিতি

অদিতি,
আমি তোমাকে প্রাণের চেয়েও বড্ড বেশি ভালোবাসি,
তোমার গাল ফুলানোতেই কাঁদি;
তোমার হৃদয়ের সুখের আলোড়নেই আমি হাসি।
আফ্রোদিতি নয়, অদিতি-ই আমার প্রেমের দেবী;
তোমাকে ছাড়া স্বাদ সব বিষাদ হয়,
ঝলসানো হয়ে যায় আমার পৃথিবী।
অদিতি, তুমি কি আমাকে ভুলে যাবে?
বাঁচার সবটুকু আশাকে মিথ্যে করে
আমাকে তুচ্ছ করবে?
যেও না, অদিতি; থেকো আমৃত্যু আমার পাশে,
তোমাকে বলার কত কথা- আমার বায়ুমন্ডলে ভাসে।
কে শোনাবে- তোমার মত সুরেলা কণ্ঠে গান?
কবি বলে কে ডাকবে আমায়? ভাঙবে আমার অভিমান।
অদিতি, আমি তোমাকে প্রাণের চেয়েও বড্ড বেশি ভালোবাসি,
আমার কবিতায় তোমাকে অমর করে
আমি সুখের জোয়ারে ভাসি।

ক্ষমা করো মাতা

মাতা মেরি,
আমাদের ক্ষমা করো।
 গির্জার ঘন্টাকে মোবাইলের রিংটোন করে
 আমরা ভুলে গেছি- মানবতা।
 মানবের প্রেম আজ নগ্ন,
যোনিতে ঢুকে থাকা প্রতিটি দন্ড
 আজ ভালবাসার সংজ্ঞা দেয়।
 হৃদয়কে তুচ্ছ করে সারাবিশ্ব
 ভালবাসার ব্যবসা খুলেছে প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টের নিচে;
আর দালালরা ছেয়ে গেছে কর্পোরেট ঢং-এ।
 তোমার ক্রুশবিদ্ধ সন্তানদের মনে আজ মানবতা জাগে না;
প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের বাণিজ্যে ভিড় করা রাষ্ট্র
 মুখ বুজে মেনে নেয় শত অন্যায়,
শাসনের তীর ঝুলে থাকে শুধু নিন্মশ্রেণির গলায়।
 নগ্ন প্রেম কখনো মানবতার কথা বলতে পারে না,
প্রতিহিংসা কখনো মঙ্গলময় হয় না,
বন্দুকের নলে আটকে থাকে শুধুই প্রতিশোধ
- এসব কখনোই ভালবাসার সংজ্ঞা দিতে পারে না।
 ক্ষমা করো মাতা,
আমাদের ধ্বংস করতে পাঠাও একটি বিধ্বংসী সাইক্লোন,
আমরা মানব হয়েও মানবতাকে করেছি
মোবাইলের রিংটোন।

বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

নিখোঁজ হব

আমি একদিন নিখোঁজ হব;
প্রিয়তমার কান্নার জলে নৌকা ভাসিয়ে,
প্রিয়জনের আহাজারির শব্দে ভেঁপু বাজিয়ে,
শূন্য অংকের সমাধান খুঁজতে
নিখোঁজ হবই;
কোন নিয়মের তোয়াক্কা ছাড়া
সরল গণিতের ল্যাটা চুকিয়ে,
ক্লান্ত পাখির কণ্ঠ লুটে
সে কণ্ঠে গান বেঁধে,
জাগরণের হুংকার দিতে
নিখোঁজ হবোই;
বিশ্বাসী মনে মরিচা জমলে
সময় করে মিলিয়ে নিও।

বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

ঈশ্বর থেকে কবি

একসময় আমি ঈশ্বর ছিলাম,
আর তুমি ছিলে দেবী।
তোমার রূপের মোহে, গুণের ছলনায়
আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।
সে-ই আমাদের প্রথম প্রণয়, প্রথম স্বস্তি।
এ সঙ্গমের বিপরীতে তুমি
তোমার প্রতিচ্ছবি দেখার জন্য
আয়না চাইলে;
আর আমি হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার প্রলোভনে
আমাদের চারপাশে সমুদ্র করে দিলাম।
এরপর তুমি সবুজ একটি দেশ চাইলে
এবং সেখানের সর্বত্র দেখতে চাইলে
তোমার ছায়া;
আমি পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ এঁকে দিলাম,
এবং দেশটি করে দিলাম নদীমাতৃক।
তুমি এখনো দেবী,
আর তোমার বর রাখতে গিয়ে
আমি ঈশ্বর থেকে হলাম-
এ বাংলাদেশের একজন কবি।